
১৭ বছর পর কারামুক্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর: ভাটি বাংলার রাজনীতিতে উৎসবের আমেজ
দীর্ঘ ১৭ বছর কারাবাসের অবসান ঘটিয়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর আজ বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি ২০২৫) দুপুর ১টা ৪৮ মিনিটে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তার এই মুক্তি নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ এবং বিএনপির বিভিন্ন অঞ্চলের নেতাকর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাসের সঞ্চার করেছে। কারাগারের বাইরে ভিড় জমায় তার পরিবারের সদস্য, দলীয় নেতাকর্মী এবং শুভানুধ্যায়ীরা। ফুল দিয়ে তাকে বরণ করে নেয়া হয়।
২০০৭ সালের ২৮ মে গ্রেপ্তার হওয়ার পর বাবর দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে ছিলেন। এ সময় তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে দুটি মামলায় মৃত্যুদণ্ড এবং একটি মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ হয়েছিল। সাম্প্রতিক সময়ে উচ্চ আদালতে আপিলের মাধ্যমে এসব মামলায় তিনি খালাস পান। বিশেষ করে আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ড থেকে খালাস পাওয়ার পর তার মুক্তির পথ নিশ্চিত হয়।
কারাগার থেকে মুক্তি ও মাজার জিয়ারত
কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর লুৎফুজ্জামান বাবর প্রথমে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে যান। সেখানে তিনি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। মাজার জিয়ারতের সময় তার সঙ্গে ছিলেন নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ এবং ঢাকার নেতাকর্মীরা। এ সময় নেতাকর্মীদের আবেগঘন মুহূর্তে বাবরের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে দেখা যায়।
নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহের নেতাকর্মীদের অভ্যর্থনা
বাবরের মুক্তির খবরে তার নিজ এলাকা নেত্রকোনা এবং ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন এলাকা থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা ঢাকায় ছুটে আসেন। তাদের মধ্যে অনেকে বলেন, বাবর ছিলেন ভাটি বাংলার উন্নয়নের প্রতীক। তার কারাবাসে নেত্রকোনার মানুষ শুধু তাদের নেতা হারাননি, তারা হারিয়েছেন এক জনহিতৈষী নেতাকে।
ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও যুবদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক রয়েল বলেন, “ভাটি বাংলার প্রবাদ পুরুষ ও উন্নয়নের রূপকার লুৎফুজ্জামান বাবরের মুক্তি শুধু নেত্রকোনা নয়, পুরো বিএনপির রাজনীতিতে নতুন শক্তি আনবে। তিনি সবসময় মানুষের জন্য কাজ করেছেন। তার অভিজ্ঞতা, নেতৃত্ব ও দূরদর্শিতা দলকে সুসংহত করবে।”
রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন
লুৎফুজ্জামান বাবরের মুক্তিকে কেন্দ্র করে বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে তার জনপ্রিয়তা নতুন দিক নির্দেশনা আনবে বলে মনে করেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। বাবরের মুক্তির খবরে নেত্রকোনার বিভিন্ন স্থানে আনন্দ মিছিল হয়েছে।
বাবরের দীর্ঘ কারাবাসে দলীয় রাজনীতিতে তার অনুপস্থিতি গভীর প্রভাব ফেলেছিল বলে দলীয় নেতারা জানান। তার ফিরে আসাকে তারা “ন্যায়বিচারের বিজয়” হিসেবে অভিহিত করেছেন। বিএনপির শীর্ষ নেতাদের দাবি, বাবরের মুক্তি দলকে আরো সুসংগঠিত করবে এবং সামনের দিনগুলোতে আন্দোলন-সংগ্রামে তার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হবে।
বাবরের মুক্তিকে কেন্দ্র করে নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহে স্থানীয় রাজনীতিতেও উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। অনেক নেতাকর্মী তার প্রত্যাবর্তনকে “ভাটি বাংলার বিজয়” হিসেবে দেখছেন। তারা আশাবাদী, বাবরের নেতৃত্বে নেত্রকোনা ও আশপাশের এলাকায় বিএনপি নতুন শক্তি নিয়ে সামনে এগিয়ে যাবে।
মুক্তি উদযাপনে আনন্দঘন পরিবেশ
কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই বাবরকে ঘিরে তার অনুগামীদের আবেগঘন পরিবেশ লক্ষ্য করা যায়। ঢাকার বিভিন্ন স্থানে তার মুক্তিকে কেন্দ্র করে মিছিল ও আনন্দ উদযাপন দেখা যায়। নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহের পাশাপাশি দেশের অন্যান্য স্থান থেকেও অনেক নেতাকর্মী ঢাকায় এসে তার সঙ্গে দেখা করেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, লুৎফুজ্জামান বাবরের মুক্তি বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নতুন দিক উন্মোচন করবে। দীর্ঘ কারাবাস শেষে তার প্রত্যাবর্তন দলীয় সংগঠনে নতুন শক্তি এবং উজ্জীবনের বার্তা নিয়ে এসেছে।
বহুল পঠিত
পাঠকের পছন্দে শীর্ষ সংবাদ
সর্বশেষ সংবাদ
সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ
মন্তব্য করুন 💬